এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর ১৫ উপায়: সাশ্রয়ী টিপস ও ট্রিকস

গরমের দিনে এসি ছাড়া থাকা অসম্ভব। কিন্তু এসি চালানোর খরচ অনেক বেশি হয়। আপনার বিদ্যুৎ বিল কমানোর কিছু সহজ উপায় আছে। এসি চালানোর সময় কিছু ছোট ছোট পরিবর্তন আনলে খরচ কমানো সম্ভব। আপনি কি জানেন, এসির তাপমাত্রা সামান্য কম বা বেশি করলেই বিদ্যুৎ খরচ অনেক কমে যেতে পারে? এছাড়াও, এসির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার করাও খরচ কমানোর একটি ভালো উপায়। এই ব্লগ পোস্টে আমরা এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর ১৫টি কার্যকর উপায় নিয়ে আলোচনা করব। চলুন, জানি কিভাবে আপনার বিদ্যুৎ বিল কমাতে পারেন এবং একই সাথে এসির কার্যকারিতা বাড়াতে পারেন।

এসির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

এসি ব্যবহারের সময় বিদ্যুৎ খরচ কমানোর জন্য তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসির তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে বিদ্যুৎ খরচ কমে যায় এবং ঘরের আরামদায়ক তাপমাত্রা বজায় থাকে। সঠিক তাপমাত্রা সেটিংসের মাধ্যমে এসির কার্যকারিতা বাড়ানো যায়।

তাপমাত্রা সমন্বয়

এসির তাপমাত্রা ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সেট করুন। এই তাপমাত্রা ঘরের আরামদায়ক পরিবেশ বজায় রাখে। বেশি কম তাপমাত্রা সেট করলে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। এসির তাপমাত্রা নিয়মিত চেক করুন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সমন্বয় করুন।

অটোমেটিক মোড ব্যবহার

এসির অটোমেটিক মোড ব্যবহার করুন। এই মোডটি তাপমাত্রা এবং ফ্যান স্পিড নিজেই নিয়ন্ত্রণ করে। এতে বিদ্যুৎ খরচ কমে যায়। অটোমেটিক মোড ব্যবহার করলে এসি নিজেই তাপমাত্রা অনুযায়ী কাজ করে। ফলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ হয় না।

এসির ফিল্টার পরিষ্কার

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর অন্যতম উপায় হল এসির ফিল্টার পরিষ্কার রাখা। ফিল্টার পরিষ্কার না থাকলে এসির কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। তাই নিয়মিত ফিল্টার পরিষ্কার করাটা অত্যন্ত জরুরি।

নিয়মিত ফিল্টার পরিবর্তন

ফিল্টার পরিষ্কার রাখার সহজ উপায় হল নিয়মিত ফিল্টার পরিবর্তন করা। পুরানো ফিল্টার থেকে ধুলা এবং ময়লা জমে গেলে এসির কার্যক্ষমতা কমে যায়। প্রতি দুই থেকে তিন মাস অন্তর ফিল্টার পরিবর্তন করা উচিত।

ফিল্টার পরিষ্কারের সময়সূচী

ফিল্টার পরিষ্কার রাখতে একটি নিয়মিত সময়সূচী মেনে চলুন। নিচে একটি সাধারণ সময়সূচী দেখানো হল:

পরিষ্কারের সময় কাজের বিবরণ
প্রতি মাসে ফিল্টার ধুয়ে পরিষ্কার করা
প্রতি ছয় মাসে ফিল্টার পরিবর্তন করা
প্রতি বছরে ফিল্টার এবং এসির সম্পূর্ণ সিস্টেম পরিদর্শন করা

রুমের নিরোধক উন্নতি

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো রুমের নিরোধক উন্নতি করা। একটি ভাল নিরোধক রুম আপনার এসির কার্যকারিতা বাড়ায় এবং বিদ্যুৎ খরচ কমায়। এটি দীর্ঘমেয়াদে আপনাকে আর্থিক সাশ্রয় করে। নিচে রুমের নিরোধক উন্নতির জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি দেওয়া হলো।

উইন্ডো ও দরজার সিলিং

উইন্ডো ও দরজার সিলিং ঠিকঠাক আছে কিনা পরীক্ষা করুন। বাতাস ঢোকা-যাওয়া রোধ করতে সিলিং ভালোভাবে বন্ধ রাখুন। দরজার নিচে রাবারের স্ট্রিপ লাগান। উইন্ডোর ফ্রেমে ফোম সিল ব্যবহার করুন।

পর্দা ও ব্লাইন্ড ব্যবহার

পর্দা ও ব্লাইন্ড ব্যবহার করে রুমের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন। সূর্যের আলো সরাসরি রুমে প্রবেশ করতে দেয়া উচিত নয়। ঘন পর্দা বা ব্লাইন্ড ব্যবহার করুন। এগুলো সূর্যের তাপ রোধ করে।

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর ১৫ উপায়: সাশ্রয়ী টিপস ও ট্রিকস

Credit: www.prothomalo.com

স্মার্ট থার্মোস্ট্যাট ব্যবহার

আপনার এসির বিদ্যুৎ খরচ কমাতে স্মার্ট থার্মোস্ট্যাট ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকর। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আপনার ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি আপনার বিদ্যুৎ বিল কমাতে সাহায্য করতে পারে। স্মার্ট থার্মোস্ট্যাটের সুবিধা ও সঠিক সেটিংস নিয়ে আলোচনা করা হল।

স্মার্ট থার্মোস্ট্যাটের সুবিধা

স্মার্ট থার্মোস্ট্যাটের মাধ্যমে আপনি এসি ব্যবহার আরও কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এটি তাপমাত্রা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামঞ্জস্য করে। ফলে এসি কম খরচে চলে। এটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আপনি যে কোনও জায়গা থেকে তাপমাত্রা সেট করতে পারবেন।

এটি আপনার এসির কার্যকারিতা বাড়ায় এবং বিদ্যুৎ বিল কমায়। স্মার্ট থার্মোস্ট্যাট আপনার জীবনকে সহজ করে। আপনার সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে।

সঠিক সেটিংস

স্মার্ট থার্মোস্ট্যাটের সঠিক সেটিংস গুরুত্বপূর্ণ। এসির তাপমাত্রা ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখুন। ঘরে কেউ না থাকলে এসি বন্ধ রাখুন। ঘুমানোর সময় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়িয়ে রাখুন।

মাসের শেষে বিদ্যুৎ বিল কম দেখতে পাবেন। স্মার্ট থার্মোস্ট্যাটের মাধ্যমে এসির সঠিক সেটিংস নিশ্চিত করুন। এটি আপনার বিদ্যুৎ খরচ কমাতে সাহায্য করবে।


বাইরের তাপমাত্রা অনুযায়ী এসির ব্যবহার

বাইরের তাপমাত্রা অনুযায়ী এসির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গরম বা ঠান্ডা আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে এসির কার্যক্ষমতা বাড়ানো বা কমানো যায়। এতে বিদ্যুৎ খরচ কমে যায় এবং এসির আয়ু বাড়ে। সঠিক তাপমাত্রায় এসি ব্যবহার করলে ঘর ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিলও কমানো সম্ভব।

ঠান্ডা দিনে এসি বন্ধ রাখা

ঠান্ডা দিনে এসির প্রয়োজন নেই। বাইরের ঠান্ডা বাতাস ঘর ঠান্ডা রাখতে সহায়ক। এসি চালিয়ে বিদ্যুৎ খরচ বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই। ঠান্ডা দিনে জানালা খোলা রেখে ঠান্ডা বাতাস ঘরে ঢুকতে দিন। এতে ঘর প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা থাকবে এবং বিদ্যুৎ খরচও কম হবে।

রাতের বেলা এসির ব্যবহার কমানো

রাতের বেলা তাপমাত্রা সাধারণত কম থাকে। তাই এসি কম ব্যবহার করা উচিত। এসি চালানোর সময় তাপমাত্রা একটু বাড়িয়ে দিন। এতে এসি কম সময় চালু থাকবে এবং বিদ্যুৎ খরচ কমবে। রাতের বেলা ফ্যান চালিয়ে ঘর ঠান্ডা রাখতে পারেন। এতে এসির প্রয়োজন কমে যাবে এবং বিদ্যুৎ খরচও কমবে।

বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ

বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর একটি কার্যকর উপায়। আপনি যদি সঠিকভাবে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করেন, তবে বিদ্যুৎ বিল অনেকটা কমানো সম্ভব। নিচে কিছু কার্যকর উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

অপ্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বন্ধ রাখা

অপ্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বন্ধ রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় আমরা অনেক সরঞ্জাম একসাথে চালু রাখি, যা বিদ্যুৎ খরচ বাড়িয়ে দেয়। কাজ শেষ হলে সরঞ্জাম বন্ধ রাখুন। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

এনার্জি ইফিশিয়েন্ট সরঞ্জাম

এনার্জি ইফিশিয়েন্ট সরঞ্জাম ব্যবহার করা উচিত। এনার্জি ইফিশিয়েন্ট সরঞ্জাম কম বিদ্যুৎ খরচ করে। তাই এসির সাথে এই ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার করুন। এটি বিদ্যুৎ বিল কমাতে সাহায্য করবে।

রুমের সঠিক সাইজের এসি নির্বাচন

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর জন্য সঠিক সাইজের এসি নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রুমের আকার অনুযায়ী সঠিক এসি বাছাই করলে বিদ্যুৎ খরচ অনেক কমে। রুমের আকারের সাথে মেলে এমন এসি কিনলে এসির কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং বিদ্যুতের অপচয় কমে যায়।

রুমের আকার অনুযায়ী এসি

প্রথমে রুমের আকার বুঝতে হবে। বড় রুমে বড় এসি দরকার। ছোট রুমে ছোট এসি যথেষ্ট। রুমের আকার নির্ণয় করতে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ মাপুন। তারপর সঠিক এসি নির্বাচন করুন।

বেশি ক্ষমতার এসি না কেনা

রুমের আকারের চেয়ে বেশি ক্ষমতার এসি কিনবেন না। বেশি ক্ষমতার এসি বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। এতে বিদ্যুতের বিল বেড়ে যায়। সঠিক ক্ষমতার এসি বাছাই করলে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়।

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর ১৫ উপায়: সাশ্রয়ী টিপস ও ট্রিকস

Credit: news.codeprojonmo.com

এসির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ

এসির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি এসির কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং বিদ্যুৎ খরচ কমায়। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এসির আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করে। এছাড়া, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এসির কর্মক্ষমতা বজায় রাখে।

নিয়মিত সার্ভিসিং

নিয়মিত সার্ভিসিং এসির কার্যকারিতা বজায় রাখে। বছরে অন্তত দুবার এসির সার্ভিসিং করা উচিত। এতে এসির ফিল্টার পরিষ্কার হয়। এসির ফিল্টার পরিষ্কার থাকলে বাতাস সহজে প্রবাহিত হয়। ফলে এসির বিদ্যুৎ খরচ কমে।

রক্ষণাবেক্ষণের টিপস

ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করুন। প্রতি মাসে একবার ফিল্টার ধুয়ে নিন। এসির আউটডোর ইউনিট পরিষ্কার রাখুন। আউটডোর ইউনিটে ধুলা জমলে এসির কার্যকারিতা কমে।

এসির তাপমাত্রা ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখুন। কম তাপমাত্রায় বিদ্যুৎ খরচ বেশি হয়। এসির ফ্যান মোড ব্যবহার করুন। ফ্যান মোডে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়।

পাখা ব্যবহার

গরমের দিনে এসি চালানো ছাড়া উপায় নেই। তবে এসির খরচ কমাতে পাখা ব্যবহার করা যেতে পারে। পাখা ব্যবহার করলে এসির উপর চাপ কমে এবং বিদ্যুৎ খরচও কম হয়। নিচে পাখা ব্যবহারের কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

সিলিং পাখার ব্যবহার

সিলিং পাখা ঘরের বাতাসকে সঞ্চালন করে, যা ঠান্ডা বাতাসকে সমানভাবে ছড়িয়ে দেয়। এতে এসি কম সময় ধরে চালাতে হয়। সিলিং পাখা চালালে ঘরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে। এসির তাপমাত্রা বেশি রাখলেও ঘর ঠান্ডা থাকে। ফলে বিদ্যুৎ কম খরচ হয়।

পোর্টেবল পাখা

পোর্টেবল পাখা সহজেই স্থানান্তর করা যায়। এটি ঘরের যেকোনো স্থানে ব্যবহার করা যায়। পোর্টেবল পাখা এসির বাতাসকে আরও কার্যকরভাবে ছড়িয়ে দেয়। ফলে এসির উপর চাপ কমে। পোর্টেবল পাখার ব্যবহার বিদ্যুৎ খরচ কমাতে সাহায্য করে।

শেড ও সানশেড ব্যবহার

গরমের দিনগুলোতে এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর জন্য শেড ও সানশেড ব্যবহার খুবই কার্যকর। শেড ও সানশেড ঘরের ভিতরে তাপ কমায় এবং এসির উপর চাপ কমায়। এই উপায়গুলি সহজে প্রয়োগযোগ্য এবং কার্যকরী।

উইন্ডো শেড

উইন্ডো শেড ব্যবহার করলে ঘরের ভিতরে সরাসরি সূর্যের আলো প্রবেশ করা বন্ধ হয়। এটি ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

  • গাঢ় রঙের শেড ব্যবহার করুন।
  • পর্দা বা ব্লাইন্ডস ব্যবহার করতে পারেন।
  • উইন্ডো শেড প্রতিদিন ব্যবহার করুন।

রুম শেড

রুম শেড সঠিকভাবে ব্যবহার করলে ঘরের ভিতরে তাপ কম থাকে। এটি এসির বিদ্যুৎ খরচ কমায়।

  1. আলো প্রতিরোধক শেড ব্যবহার করুন।
  2. শেডের রঙ হালকা রাখুন।
  3. শেডগুলি নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।
উপায় ফলাফল
উইন্ডো শেড তাপ কমায়
রুম শেড বিদ্যুৎ খরচ কমায়

বায়ুপ্রবাহের নিয়ন্ত্রণ

বায়ুপ্রবাহের নিয়ন্ত্রণ আপনার এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। সঠিক বায়ুপ্রবাহ নিশ্চিত করতে, আপনাকে ভেন্টিলেশন সিস্টেম এবং বায়ুপ্রবাহের রুট সম্পর্কে জানতে হবে।

ভেন্টিলেশন সিস্টেম

ভেন্টিলেশন সিস্টেম যথাযথভাবে কাজ করলে ঘরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় থাকে। এতে এসির উপর চাপ কমে। ফলে বিদ্যুৎ খরচও কমে।

  • ফিল্টার পরিষ্কার: ভেন্টিলেশন সিস্টেমের ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। এটি সঠিক বায়ুপ্রবাহ নিশ্চিত করে।
  • উপযুক্ত ফ্যান: ঘরে উপযুক্ত ফ্যান ব্যবহার করুন। এটি তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে।
  • যথাযথ ইনস্টলেশন: ভেন্টিলেশন সিস্টেম সঠিকভাবে ইনস্টল করুন। এটি বায়ুপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

বায়ুপ্রবাহের রুট

বায়ুপ্রবাহের রুট সঠিকভাবে নির্ধারণ করা জরুরি। সঠিক রুট না হলে এসির কার্যক্ষমতা কমে। বিদ্যুৎ খরচও বেড়ে যায়।

  1. বাধা মুক্ত: এসির সামনে কোন বাধা থাকলে তা সরিয়ে দিন। এটি বায়ুপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
  2. উপযুক্ত অবস্থান: এসি এমন জায়গায় ইনস্টল করুন যেখানে বায়ু সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে।
  3. উপযুক্ত এয়ার আউটলেট: এয়ার আউটলেটের দিক সঠিকভাবে নির্ধারণ করুন। এটি এসির কার্যক্ষমতা বাড়াবে।

আলোকসজ্জা নিয়ন্ত্রণ

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর জন্য আলোকসজ্জা নিয়ন্ত্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে আলো নিয়ন্ত্রণ করলে এসির ওপর চাপ কমে এবং বিদ্যুৎ খরচ কমে। নিচে আলোকসজ্জা নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায় আলোচনা করা হলো।

এনার্জি ইফিশিয়েন্ট লাইট

এনার্জি ইফিশিয়েন্ট লাইট ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। এই লাইট কম বিদ্যুৎ খরচ করে বেশি আলো দেয়। বাজারে এলইডি এবং সিএফএল লাইট পাওয়া যায়। এলইডি লাইট খুবই কার্যকর এবং দীর্ঘস্থায়ী।

  • এলইডি লাইট ব্যবহার করুন
  • সিএফএল লাইটও ভালো অপশন
  • পুরোনো ইনক্যান্ডেসেন্ট বাল্ব বাদ দিন

প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার

প্রাকৃতিক আলো ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ খরচ কমানো সম্ভব। দিনের বেলায় জানালা খুলে রাখুন। এতে ঘরে আলোর পাশাপাশি বাতাসও প্রবেশ করে।

  1. জানালার পর্দা সরান
  2. ঘরে হালকা রঙের দেয়াল রাখুন
  3. প্রয়োজনবোধে লাইটের পরিবর্তে প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করুন

আলোকসজ্জা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এসির বিদ্যুৎ খরচ অনেকটাই কমানো সম্ভব।

নির্দিষ্ট সময়ে এসি চালানো

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমাতে নির্দিষ্ট সময়ে এসি চালানো একটি কার্যকর উপায়। এটি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ বিল কমাবে না, বরং এসির দীর্ঘস্থায়িতাও নিশ্চিত করবে।

অফ পিক আওয়ার ব্যবহার

বিদ্যুৎ খরচ কমাতে অফ পিক আওয়ার ব্যবহার করুন। এই সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে, ফলে বিদ্যুতের খরচও কম হয়।

  • সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এসি কম চালান।
  • রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত এসি চালানো কার্যকর।

শিডিউল সেট করা

শিডিউল সেট করা এসির কার্যক্ষমতা ও বিদ্যুৎ খরচ কমাতে সহায়ক।

  1. এসির টাইমার ফিচার ব্যবহার করুন।
  2. শিডিউল অনুযায়ী এসি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু ও বন্ধ হবে।
  3. ঘুমানোর আগে এসি চালিয়ে শিডিউল সেট করুন।

এসির শিডিউল সেট করার মাধ্যমে বিদ্যুৎ খরচ অনেক কমানো সম্ভব।

এসির মডেল ও প্রযুক্তি

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর জন্য এসির মডেল এবং প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিক এসি মডেল নির্বাচন এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বিদ্যুৎ খরচ অনেকটা কমাতে পারে। এখানে এসির কিছু মডেল ও প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হলো।

ইনভার্টার এসি

ইনভার্টার এসি বিদ্যুৎ খরচ কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এই এসি কম্প্রেসার গতি নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। ইনভার্টার এসি কম বিদ্যুৎ খরচে কক্ষ ঠান্ডা রাখে। এটি সাধারণ এসির থেকে ৩০-৫০% কম বিদ্যুৎ খরচ করে।

উন্নত প্রযুক্তির মডেল

এসির উন্নত প্রযুক্তির মডেল বিদ্যুৎ খরচ কমাতে সাহায্য করে। এই ধরনের এসিতে রয়েছে উচ্চ দক্ষতার কুলিং সিস্টেম। উন্নত ফিল্টার এবং সেন্সর প্রযুক্তি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এই এসিগুলি দীর্ঘস্থায়ী এবং পরিবেশ বান্ধব। উন্নত প্রযুক্তির এসি বিদ্যুৎ খরচ কমায় এবং কক্ষ দ্রুত ঠান্ডা করে।

গ্রিনারি ও গাছপালা

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর জন্য গ্রিনারি ও গাছপালা অত্যন্ত কার্যকর উপায় হতে পারে। গাছপালা ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বাইরে ও ঘরের ভেতরে গাছপালা রোপণ করলে এসির ওপর চাপ কমে। এতে বিদ্যুৎ খরচও কমে যায়।

বাইরের গাছপালা

বাড়ির বাইরে গাছপালা লাগালে সেগুলো সূর্যের তাপ শোষণ করে। ফলে ঘরের তাপমাত্রা কম থাকে। বড় গাছের ছায়া ঘরের ছাদ ও দেয়ালকে ঠান্ডা রাখে। এতে এসির কাজ কমে যায়। ফলে বিদ্যুৎ খরচও কম হয়।

আপনার বাড়ির চারপাশে দ্রুতবর্ধমান গাছ লাগান। যেমন, নিম, মেহগনি বা অশ্বত্থ। এগুলো দ্রুত বড় হয় এবং ভালো ছায়া প্রদান করে।

ইন্ডোর প্লান্ট

ঘরের ভিতরে গাছপালা রাখলে পরিবেশ শীতল হয়। ইন্ডোর প্লান্ট বাতাসে আর্দ্রতা বৃদ্ধি করে। ফলে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

বারান্দা বা জানালার পাশে বাগান তৈরি করুন। স্নেক প্ল্যান্ট, মানি প্ল্যান্ট বা অ্যালো ভেরা রাখুন। এগুলো সহজে যত্ন নেওয়া যায় এবং ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখে।

ইন্ডোর প্লান্টগুলি এসির কাজ কমিয়ে দেয়। তাই বিদ্যুৎ খরচও কমে যায়।

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর ১৫ উপায়: সাশ্রয়ী টিপস ও ট্রিকস

Credit: www.facebook.com

Frequently Asked Questions

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমাতে কী করতে হবে?

এসির তাপমাত্রা ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখুন। নিয়মিত ফিল্টার পরিষ্কার করুন। সূর্যের আলো ঢুকতে দেবেন না।

এসির ফিল্টার কত দিন পর পর পরিষ্কার করা উচিত?

প্রতি দুই সপ্তাহে একবার এসির ফিল্টার পরিষ্কার করা উচিত। এটি বিদ্যুৎ খরচ কমাতে সাহায্য করে।

এসির তাপমাত্রা কত রাখলে বিদ্যুৎ খরচ কম হবে?

এসির তাপমাত্রা ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখলে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। এটি আরামদায়কও।

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর সহজ উপায় কী?

সঠিক তাপমাত্রা সেট করুন। নিয়মিত ফিল্টার পরিষ্কার রাখুন। সূর্যের আলো ব্লক করুন।

Conclusion

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানো কঠিন নয়। সহজ কিছু কৌশল মানলেই সম্ভব। নিয়মিত এসির রক্ষণাবেক্ষণ করুন। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন। পরিবেশবান্ধব এসি ব্যবহার করুন। জানালাগুলো বন্ধ রাখুন। সঠিক এসি নির্বাচন করুন। ঘরের তাপমাত্রা বুঝে এসি চালান। এই উপায়গুলো মেনে চললে বিদ্যুৎ খরচ কমবে। ইলেকট্রিক বিল নিয়ে চিন্তা কমবে। সাশ্রয়ী জীবনযাপন সম্ভব হবে। চেষ্টা করুন, ফলাফল পাবেন। এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানো সম্ভব।

Leave a Comment